থাইল্যান্ডের নাগরিক আব্দুস সালাম। বয়স (৬৪)। পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। বাইসাইকেলে করে থাইল্যান্ড থেকে যাচ্ছেন হজ পালন করতে।
পায়ে চালানো বাইসাইকেল নিয়ে তিনি থাইল্যান্ডের শহর চেঙ্গাই নিজ বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে।
এরপর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে ১৬ তারিখে বিমানযোগে পৌঁছান ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে। থাইল্যান্ডের পাশের দেশ মিয়ানমারে প্রবেশ করতে পারেননি বলে সরাসরি বিমানযোগে ঢাকায় পৌঁছান গত শুক্রবার।
পরবর্তীতে মাগুরা থেকে তিনি যাচ্ছেন যশোরের বেনাপোল। এরপর ভারতের সীমান্ত পার হয়ে হয়ে যাবেন কলকাতায়। সেখানে থেকে যাবেন দিল্লি। তবে তা আর হলো কই! তীব্র ইচ্ছা থাকলেও সাইকেল চালিয়ে সড়ক পথে হজে যাওয়ার সপ্ন তার সপ্নই থেকে গেল। বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে ফিরিয়ে দিয়ে বিমানে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। অথচ তার ভিসা ছিল ই-ভিসা। তিনি এই ভিসায় সড়ক ও বিমান পথে যেতে পারবেন।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
তিনি জানান, সাইকেল চালিয়ে হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাওয়ার পথে থাই নাগরিক ইসা আব্দুস সালাম ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে পথিমধ্যে কয়েকটি স্থানে বিরতির পর বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার সময় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ভারতে প্রবেশ করেন। কিন্তু বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন তাকে সড়কপথে যাওয়া যাবে না বলে জানায়। বিমানে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরে তিনি সাইকেল চালিয়ে পুনরায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেনাপোল ত্যাগ করেন।
তবে এই এ থাই নাগরিকের এমন পরিকল্পনা দেখে বিস্মিত হয়েছেন বেনাপোলের স্থানীয় বাসিন্দারা। তার এই মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে। কিন্তু পেট্রাপোল চেকপোস্ট থেকে ফেরত আসার পর অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ইসা আব্দুস সালাম জানান, তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। তার বাড়ি মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় হলেও সেখানে অস্থিতিশীলতার কারণে বিমানে বাংলাদেশে এসেছেন। তার সাইকেলও ঢাকায় এনেছেন বিমানে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, সাইকেলে গত পাঁচ দিনে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় পৌঁছান মাগুরায়। এরপর যশোর হয়ে আজ সকালে বেনাপোল চেকপোস্টে পৌঁছান। বেনাপোল হয়ে তিনি প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন ভারতে। সেখান থেকে পাকিস্তান, ইরান, কুয়েত হয়ে পৌঁছাতে চান সৌদি আরবের মক্কায়। ইছার পরিকল্পনা অনুযায়ী, দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে তার সময় লাগবে ছয় মাস। কিন্তু তাকে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ফেরত দিয়েছে। বলেছে সড়ক পথে যাওয়া যাবে না। তাই ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন।