দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময়ে প্রায় সমানে সমান ছিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি। কখনো সেরার দৌড়ে এগিয়েছিলেন রোনালদো আবার কখনো মেসি।
সে সময়ে সে খেলোয়াড়ের পুরষ্কার ব্যালন ডি’অর নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে ফুটবলীয় এই লড়াইকে দিয়েছিলেন বাড়তি মাত্রা।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের এই দ্বৈরথে মেসির চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন সিআর সেভেন। আর ‘অহংকার’ রোনালদোকে পিছিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন সাবেক জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্যাথিউজ।
সময়ের অন্যতম সেরা এই দুই তারকার বিশ্বকাপ কেটেছে দুইরকম। মেসি ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ জিতে সর্বোচ্চ আসরে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের শিরোপা খরার অবসান ঘটালেও সম্ভাব্য শেষটা রাঙাতে পারেননি রোনালদো। এমনকি গ্রুপ পর্ব শেষে নকআউট পর্বে তো জায়গা হারিয়েছিলেন শুরুর একাদশের। তার দল পর্তুগালও ছিটকে গেছে শেষ আটে মরক্কোর বিপক্ষে হেরে।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের মানদণ্ডে ক্ষুদে জাদুকর যোজন যোজন এগিয়ে ছিলেন রোনালদোর থেকে। সাত গোল ও তিন অ্যাসিস্ট করে মেসি কাতার বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেও গোটা আসরে রোনালদো ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। একমাত্র গোলটি পেয়েছিলেন ঘানার বিপক্ষে। আর সেটাও এসেছে পেনাল্টি থেকে। সতীর্থদেরও সে অর্থে কোনো যোগান দিতে পারেননি।
ম্যাথিউজের মতে রোনালদোর এই পতনের কারণ তার অহংকার। জার্মান গণমাধ্যম বিল্ডকে তিনি বলেন, ‘অহংকার করে রোনালদো নিজের ও দলের ক্ষতি করেছে। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই সে দারুণ খেলোয়াড় ও পুরোপুরি ভয়ংকর একজন ফিনিশার ছিলো। কিন্তু এখন সে নিজেই তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। আমি মনে করি না সে কোনো একটি দলে জায়গা পেতে পারে। আমার তার জন্য কিছুটা খারাপ লাগে।’
মেসি-রোনালদো দ্বৈরথে আর্জেন্টাইন অধিনায়কই চূড়ান্ত বিজয়ী বলে মনে করেন ১৯৯০ এর বিশ্বকাপজয়ী তারকা, ‘অবশ্যই বিশ্বকাপের বড় একটি ব্যর্থতার নাম ছিল রোনালদো, মেসির বিপরীত ছিল সে। মেসি চূড়ান্ত বিজয়ী। সে এটার দাবিদার কারণ তার স্কিল ও যেভাবে সে গত ১৭-১৮ বছর ধরে খেলে আসছে। সে আমাকে ও সব ফুটবল ভক্তকেই দারুণ আনন্দ দিয়েছে।’
ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নেমে এই ম্যাথিউজেরই বিশ্বকাপে ২৫ ম্যাচ খেলার রেকর্ড ভেঙেছিলেন মেসি। তবু তাকে সেরা হিসেবে মেনে নিতে পিছ পা হননি ৬১ বছর বয়সী এই সাবেক ফুটবলার, ‘আমার মতে মেসি হাজার বছরের মধ্যে সেরা খেলোয়াড়।’