বিয়ের তারিখ চূড়ান্ত, প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিয়ের। কিন্তু ভয়াবহ ভূমিকম্পে মুহূর্তেই সব স্বপ্ন শেষ হয় তুর্কি তরুণ ইউনুসের।
নিজে বাঁচলেও বাঁচেননি তার হবু স্ত্রী। বিধ্বস্ত ভবনে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে তার। বিয়ের পোশাকের পরিবর্তে এখন প্রিয়তমাকে পরাতে হবে কাফনের কাপড়। খবর রয়টার্স‘র।
এদিকে তুরস্ক-সিরিয়ার বিধ্বংসী ভূমিকম্পে, মৃতের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে জন্ম নিচ্ছে হৃদয়বিদারক এমন অনেক গল্প। এপ্রিলে পূর্ণতা পেতো তাদের তিন বছরের প্রণয়। বধু সাজিয়ে প্রেমিকাকে ঘরে তোলার কথা ছিল।
বিধ্বংসী ভুমিকম্প মুহূর্তেই চুরমার করে দিয়েছে সব স্বপ্ন। দু’জনের বাড়ি কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে। ভূমিকম্পের দুলুনি টের পেয়ে নিজের বাড়ি থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন ইউনুস।
প্রাণপনে দৌড় শুরু করেন, হবু স্ত্রীর বাড়ির দিকে। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি। প্রিয়তমাকে জীবিত পাননি তিনি। ইউনুস এমরি কায়া বলেন, তার কথা বলে শেষ করা যাবে না। যখন আমি সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করি, তখন প্রথমবার তাকে দেখি। তখন তার বয়স ছিল ১৭। প্রথম দেখাতে দু’জন দু’জনকে ভালোবেসে ফেলি। আমার চেয়ে চার বছরের ছোট ছিল। আমাকে অনেক বেশিই ভালোবাসতো সে। এতো ভালোবাসা আমি আর কখনও কারও কাছ থেকে পাইনি।
গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল দু’জনের। পারিবারিক কারণে তা পিছিয়ে যায় ২৮ এপ্রিলে। আর এখন, বিয়ের পোশাকের পরিবর্তে হবু স্ত্রীকে পরাতে হবে কাফনের কাপড়। ইউনুস এমরি কায়া আরও বলেন, তাকে কথা দিয়েছিলাম, যতকিছু হোক, আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না। এপ্রিলের ২৮ তারিখ আমাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এমন কিছু হবে কখনও কল্পনাও করিনি। স্বপ্ন ছিল তাকে বিয়ের পোশাক পারবো, আর এখন কাফনের কাপড় পরাতে হচ্ছে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
এদিকে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে মরদেহ রাখতে স্টেডিয়াম-পার্কিং লটকে বানানো হয়েছে অস্থায়ী মর্গ। দাফনের জন্য, এসব মর্গে রাখা প্রিয়জনের মরদেহ বাড়ি নিতে ইউনুসের মতো অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন।