নাসায় যোগদান করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমরান

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেপিএলে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে যোগদান করে কাজ শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল ইমরান।

ইতোমধ্যে জেপিএলের ওয়েবসাইটে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোর তালিকায় ইমরানের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার পশ্চিম রামপুরের ছেলে ইমরান। তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম। মা মাহমুদা খাতুন গৃহিণী।

নিজ এলাকায় স্কুল-কলেজের পাঠ শেষে ইমরান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন তিনি।

এসএসসিতে এবং এইচএসসিতে তুলনামূলক ভাবে কম জিপিএ নিয়ে তিনি ঢাবিতে ভর্তি হন। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে চতুর্থ বিষয় ছাড়া ইমরানের জিপিএ ৩.৫৭ এবং এইচএসসিতে ছিলো ৪.৪। তবে ঢাবিতে ভর্তি হয়ে বদলে যান ইমরান। যার ফলাফল পান হাতে নাতে। তিনি অনার্স ও মাস্টার্স উভয় পরীক্ষায় প্রথম হন। অনার্সে তাঁর সিজিপিএ ৩.৬৯। মাস্টার্সে ৩.৯৭।

অনার্স-মাস্টার্সে প্রথম স্থান এবং ভালো সিজিপিএ থাকায় ঢাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল ইমরানের। একাধিকবার আবেদন করেও কোনোবারই তিনি নিয়োগের জন্য বিবেচিত হননি।

ঢাবিতে নিয়োগ না পাওয়ার বিষয়ে ইমরান বলেন, ‘আমাকে কেন নেওয়া হয়নি, তা জানি না। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি না হওয়াটা আমার জন্য ভালোই হয়েছে। একটা দরজা বন্ধ হয়ে গেলে অনেকগুলো দরজা খুলে যায়। ঢাবিতে শিক্ষক হিসেবে চাকরি না হওয়াটা আমার জন্য সম্ভাবনার বড় দুয়ার খুলে দিয়েছে।’

তবে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার ভাবনা আগে থেকেই ছিল ইমরানের। ২০১৭ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্ল্যানেটারি জিওসায়েন্সে মাস্টার্স করেন তিনি। অর্জন করেন পূর্ণ সিজিপিএ-৪। ২০২২ সালে ইমরান ইউনিভার্সিটি অব আরকানসাসে স্পেস অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সাইন্সে পিএইচডি করেন।

স্পেস অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সাইন্সে পিএইচডির শেষ দিকে জেপিএলে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোর বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ে ইমরানের। দেরি না করে আবেদন করেন। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ইমরান এখন নাসার জেপিএলে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে যোগদান করে কাজ করছেন।

মহাকাশ নিয়ে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক জার্নালে ইমরানের গবেষণা নিবন্ধ রয়েছে। গবেষণার কাজটি আরও নিবিষ্টভাবে করতে চান তিনি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহী করে তুলতে চান তিনি।