অসুস্থ বন্ধুর পাশে দাঁড়ালেন স্কুল জীবনের বন্ধুরা

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার কুন্ডুপাড়া গ্রামে কিডনি রোগে আক্রান্ত অশোক দাস কুটিলের (৩৪) পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কুটিলের স্কুল পড়ুয়া বন্ধুরা।

বালিয়াকান্দি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৬ সালের স্কুল পড়ুয়া বন্ধু কুটিলের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন নগদ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা।

শুক্রবার দুপুরে বালিয়াকান্দি উপজেলার বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের কুন্ডুপাড়া গ্রামের কুটিলের পরিবারের কাছে টাকা হস্তান্তর করেন (১৯৯৪-১৯৯৬) ব্যাচের কুটিলের কয়েকজন বন্ধু। এই অর্থ পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন কুটিলের পরিবারের সদস্যরা।

কুটিলের স্ত্রী নদী দাস বলেন, স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি আর এক সন্তান নিয়ে আমাদের ছোট্ট সংসার। ২০২১ সালে আমার স্বামী কুটিলের দুইটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। ধার-দেনা করে ওকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

স্থানীয় সমাজকর্মী গোলাম মোর্তবা রিজু বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে আমাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। কুটিলের বন্ধুরা কুটিলের অসুস্থতার বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের পাঁশে দাঁড়িয়েছে। এই অর্থ আমাদের উপকারে আসবে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার স্বামী কুটিলকে বাঁচাতে চাই। সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহায়তা কামনা করেন কুটিলের স্ত্রী নদী দাস।

কুটিলের মা বলেন, সমাজে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন হয়। বিপদে পাশে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। আমার ছেলের বন্ধুরা কুটিলের বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমি মা হিসাবে গর্ববোধ করছি। আমার কুটিলকে বাঁচাতে ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান
জানান কুটিলের মা।

কুটিলের স্কুল পড়ুয়া বন্ধু মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, কুটিল আমাদের স্কুল জীবনের বন্ধু। আমরা বালিয়াকান্দি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মানিবক বিভাগে পড়ালেখা করেছি। বর্তমানে কুটিল অসুস্থ। তার দুইটি কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর আমরা ১৯৯৬ সালের বন্ধুরা তার পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করি। এরপর ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালের কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাদের সাথে যোগ দেয়। তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। শুক্রবার দুপুরে কামরুল, শিপু, দিপল, কনক, সুমন, মুরাদ, পান্নু, বাহউদ্দীন, সুবেদ, সাইফুল, বাকি ও মনি বাড়িতে গিয়ে কুটিলের পাশে দাঁড়াই। আমরা চেষ্টা করেছি বন্ধুর পাশে থাকার। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করবো কুটিলের পাশে থাকতে।

বালিয়াকান্দির সমাজকর্মী গোলাম মোর্তবা রিজু বলেন, কুটিল দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সরকারের পক্ষ থেকে তাকে একটি ঘর উপহার দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি
জানার পর আমি ওর বন্ধুসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুটিলের কিডনি নষ্টের বিষয়টি তুলে ধরি। কুটিলের বন্ধুরা তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বন্ধুর প্রতি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো কুটিলের বন্ধুরা।