নব্বই দশকে যারা সিনেমার দর্শক ছিলেন, কিংবা পরবর্তীতে যারা ওই সময়ের সিনেমাগুলো দেখেছেন, তাদের সবার কাছেই প্রিয় এক জুটি নাঈম ও শাবনাজ।
ঢাকাই সিনেমার অন্যতম মিষ্টি ও সফল জুটি তারা। খুব বেশি দিন অভিনয় না করলেও দর্শকদের হৃদয়ে ভালোবাসাময় একটি জায়গা দখল করেছেন এই তারকাদ্বয়।
একসঙ্গে কাজের সুবাদে নায়ক নাঈম ও নায়িকা শাবনাজের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্ককে তারা পূর্নতা দেন। ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর বিয়ে করেন দু’জন। দেখতে দেখতে পার হয়ে গেছে এ দম্পতির ২৭ বছর।
বলাবাহুল্য এই জুটির প্রায় সব সিনেমাই লাভ স্টোরি। সিনেমায় শুটিং করতে গিয়ে নাঈমের সঙ্গে অনেক ঘটনা ঘটেছে যা স্মরণে রেখেছেন শাবনাজ।
তিনি বলেন, ‘একবার শুটিংয়ের এমন একটি দৃশ্য ছিলো- নাঈম বাইরে থেকে চিৎকার করবে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য, আমি চিৎকার করবো ঘরের ভেতর থেকে। মাঝখানে জানালায় কাচ ছিল। ওই কাচ আমাকে ভাঙতে হবে। তো আমি কোনো কিছু চিন্তা না করেই হাত দিয়ে কাচ ভেঙে ফেলি। সঙ্গে সঙ্গে হাত কেটে যায়।
তখন রাত প্রায় ১২টা। সেদিন নাঈমের শুটিং ছিলো না। তবে সে যখন এই ঘটনা জানলো তখন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। হঠাৎ পেছন থেকে আরেকটা গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয়। তারপরও সে ছুটে আসে শুটিং স্পটে। তখনও কিন্তু আমাদের প্রেমের বিষয়টি বলা হয়নি। তবে বুঝতে পারতাম আমরা পরস্পরকে ভালোবাসি।
১৯৯১ সালে ‘চাঁদনী’ মুক্তি পায়। তারপর একের পর এক চলচ্চিত্রে দুজন জুটি বেঁধেছেন। শুটিং করতে করতে দিনে প্রায় ১৬ ঘণ্টা একসঙ্গে থেকেছেন। ফলে বন্ধুত্ব তৈরি হয়।
শাবনাজ বলেন, ‘আমরা নিজেদের মধ্যে ভালো লাগা, মন্দ লাগা শেয়ার করতাম। আবার ঝগড়া-বিবাদও হয়েছে অনেক। তবে সব মিলিয়ে দুজনের বোঝাপড়া দিন দিন ভালো হতে থাকে। সিলেটে আমরা একটি সিনেমার শুটিং করছিলাম। শট দেওয়ার পর সুন্দর একটি জায়গায় বসে আছি। এমন সময় নাঈম আমাকে প্রপোজ করে। সেদিন অনেক লজ্জা পেয়েছিলাম। যদিও আমি আগে থেকেই মনে মনে ভালোবেসে ফেলেছিলাম।’
পারিবারিকভাবে নাঈম-শাবনাজের বিয়ে হয়। প্রেমিক অভিনেতা থেকে স্বামী নাঈম সম্পর্কে শাবনাজ বলেন, ‘পর্দায় নাঈমকে আমি যেমন পেয়েছি। বাস্তব জীবনেও তা পেয়েছি। আমরা সুখে-শান্তিতে এতগুলো দিন পার করেছি।’