বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন গোপালগঞ্জের আফসানা মিমি। তিনি সার্টিফিকেট নিতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন।
তবে সার্টিফিকেট নেওয়া হয়নি আফসানার। আর প্রয়োজনও হবে না। পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুরে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় লাশ হয়েছেন আফসানা।
রোববার (১৯ মার্চ) সকাল সোয়া ৮টার দিকে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৭ জন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুজনসহ ১৯ জন মারা যান। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান আফসানা মিমি।
গোপালগঞ্জ সদরের মৃত আবু হেনা মোস্তফা কামালের মেয়ে আফসানা মিমি। বাবা প্রায় ১২ বছর আগে মারা যান। এরপর থেকে দুই মেয়ে নিয়ে মা কানিজ ফাতেমা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছিলেন। বড় মেয়ে আফসানা মিমি বাকৃবি থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। তিনি প্রতিটি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তার এলাকায়ও সবাই তাকে ‘মেধাবী ছাত্রী’ হিসেবেই চেনেন।
খবর পেয়ে মরদেহ নিতে এসেছেন নিহতের ছোট বোন রুকাইয়া রুপাসহ তার মামা। রুকাইয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার সঙ্গে থাকা আত্মীয়-স্বজনরা তাকে কিছুতেই শান্ত করতে পারছিলেন না।
কেঁদে কেঁদে রুকাইয়া রুপা বলেন, ‘মাকে এখনো জানানো হয়নি আপুর মারা যাওয়ার কথা। কীভাবে মাকে বলবো, আপু মারা গেছেন। আমার আর কেই রইলো না। আমি কার কাছে আমার সব কথা বলবো? কেন আমাদের সঙ্গে এমন হলো?’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সকালে হালকা বৃষ্টির কারণে রাস্তা পিচ্ছিল ছিল। গাড়ি দ্রুত চালানোয় হয়তো চাকা ব্লাস্ট হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।