উঠানে বাবার লাশ ফেলে রেখে সম্পদ ভাগাভাগিতে ব্যস্ত সন্তানরা

মনির আহমদ (৬৫) নামের এক ব্যাক্তি চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়িতে আনলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যায় কিন্তু লাশ দাফন করেন না সন্তানরা। তাদের দাবি, বাবার লাশ দাফন পরে, আগে সম্পদের ভাগ-বাটোয়ারা হবে।

রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেরানীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মনির আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। অবসর নেওয়ার পর তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। আমার মেজো বোন বেবি আকতার আমার বাবাকে চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার নাম করে এবি ব্যাংকে নিয়ে গিয়ে ৩০ লাখ টাকা তুলে ফেলেন। আমার ছোট ভাই সৌদি প্রবাসী আলমগীর দেশে আসার পর টাকার সমঝোতার পর বাবার দাফন করা হবে।

স্থানীয়রা জানান, অবসরের টাকা নিয়ে মেজো মেয়ে বেবী আক্তারের সঙ্গে মনির আহমদের অন্য ভাইবোনের বিরোধ চলছিল। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মারা যাওয়ার পর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে এনে লাশ রেখে দেন বাড়ির পাশের সড়কে। সকাল থেকে অবসরে টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ভাইবোনদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ চলে।

তবে বেবি আকতার অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, আমার বাবার অবসরের কোনো টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করিনি। তাদের অভিযোগগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট।

মনির আহমদের ছোট মেয়ে লিপি আকতার জানান, আমার বাবা ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমরা তিন বোন মিলে বাবার চিকিৎসা খরচ বহন করছি। এক ভাইও কোনো সহযোগিতা করেনি। অবসরের টাকার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। গতকাল বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে অবসরের টাকার বিষয় তুলে বাবার লাশ দাফন করতে দিচ্ছে না।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, বাবার অবসরের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।